চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত?
সুন্দর, লম্বা, ঘন চুল সকলেরই কাম্য। তবে বর্তমানের দূষিত পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং চাপের কারণে চুলের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। চুল পড়া, খুশকি, চুলের গোড়া দুর্বল হওয়া ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে শুধু বাইরের যত্নই যথেষ্ট নয়, বরং ভেতর থেকেও পুষ্টি জোগাতে হবে।
ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকা
চুলের জন্য উপকারী কিছু খাবার :
- বাদাম ও বীজ: কাঠ বাদাম, সূর্যমূখির বীজ, তিসি বীজ ইত্যাদি বাদাম ও বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন ই, ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং বায়োটিন থাকে। নিয়মিত বাদাম ও বীজ খাওয়া চুলের গোড়া শক্ত করে, চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
- শস্য: বাদামি চাল, ওটমিল, বার্লি ইত্যাদি শস্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি, ফাইবার এবং জিঙ্ক থাকে। নিয়মিত শস্য খাওয়া চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, খুশকি দূর করে এবং চুলকে মসৃণ করে তোলে।
- মাছ: স্যামন, সার্ডিন, হিলিশ ইত্যাদি মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের কোষগুলিকে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের শুষ্কতা দূর করে।
- ডিম: ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, বায়োটিন এবং ভিটামিন বি থাকে। নিয়মিত ডিম খাওয়া চুলের গোড়া শক্ত করে, চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
- সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, লাইফ শাক, মেথি শাক ইত্যাদি সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং আয়রন থাকে। নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খাওয়া চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে, খুশকি দূর করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে।
- ফল: কলা, আপেল, কমলালেবু, আঙ্গুর ইত্যাদি ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার থাকে। নিয়মিত ফল খাওয়া চুলের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে, চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুলকে সুস্থ রাখে।
- পানি: প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা চুলের জন্য খুবই জরুরি। পানি চুলের কোষগুলিকে হাইড্রেটেড রাখে এবং চুলের শুষ্কতা দূর করে।
খাবার ছাড়াও চুলের যত্নের কিছু টিপস:
নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখা:
- আপনার চুলের ধরণ অনুযায়ী সপ্তাহে ২-৩ বার মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- খুব গরম পানিতে চুল ধোয়া এড়িয়ে চলুন।
- শ্যাম্পু করার পর ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন যাতে কোনো শ্যাম্পু চুলে না থাকে।
চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত?
কন্ডিশনার ব্যবহার:
- প্রতিবার চুল ধোয়ার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
- কন্ডিশনার চুলের গোড়া থেকে শুরু করে চুলের ডগায় লাগান।
- কয়েক মিনিট পর কন্ডিশনার ধুয়ে ফেলুন।
চুল আঁচড়ানো:
- নিয়মিত চুল আঁচড়ানো চুলের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
- চুল আঁচড়ানোর জন্য চওড়া দাঁতযুক্ত কম্ব ব্যবহার করুন।
- ভেজা চুল কখনোই আঁচড়াবেন না কারণ এতে চুল ভেঙে যেতে পারে।
চুলের তেল ব্যবহার:
- সপ্তাহে ১-২ বার নারকেল তেল, জলপাই তেল বা বাদাম তেল দিয়ে চুল ম্যাসাজ করুন।
- তেল গরম করে চুলে লাগান এবং ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
চুলের মাস্ক:
- সপ্তাহে ১ বার ঘরে তৈরি চুলের মাস্ক ব্যবহার করুন।
- দই, ডিম, মধু, লেবুর রস ইত্যাদি দিয়ে চুলের মাস্ক তৈরি করা যায়।
- মাস্ক ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
চুলের স্টাইলিং:
- খুব বেশি গরমিতে চুল স্টাইল করা এড়িয়ে চলুন।
- হেয়ার ড্রায়ার, স্ট্রেটনার বা কার্লিং আয়রন ব্যবহারের সময় অবশ্যই হিট প্রোটেক্টেন্ট ব্যবহার করুন।
- রাসায়নিক ট্রিটমেন্ট যেমন পেইন্টিং, ব্লিচিং ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন।
পরিবেশ থেকে চুল রক্ষা:
- বাইরে বের হওয়ার সময় স্কার্ফ বা টুপি দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন।
- ধুলোবালি ও দূষণ থেকে চুল রক্ষা করুন।
চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে ধৈর্য্য ধরা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিতভাবে উপরোক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি সুন্দর, লম্বা এবং ঘন চুল পেতে পারবেন।
** মনে রাখবেন, চুলের যত্নের ক্ষেত্রে কোনো একক সমাধান নেই।** আপনার চুলের ধরণ ও সমস্যা অনুযায়ী আপনাকে উপযুক্ত টিপসগুলো বের করতে হবে।** চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত?
এছাড়াও, কোনো তীব্র চুলের সমস্যা হলে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করা উচিত। চুলের যত্নে কি কি খাওয়া উচিত?
#