সাভারে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা? এই ৭টি স্থান মিস করবেন না!
ঢাকার উপকণ্ঠে অবস্থিত সাভার শুধুমাত্র একটি উপজেলা নয়, এটি ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি সমন্বয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে শুরু করে শান্ত প্রকৃতির অরণ্যালয় মিনি চিড়িয়াখানা পর্যন্ত, সাভারে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে।
সাভারের দর্শনীয় স্থানসমূহ:
জাতীয় স্মৃতিসৌধ: বাংলাদেশের গৌরবের সাক্ষী
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ আমাদের জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ঢাকার সাভারে অবস্থিত এই স্মৃতিসৌধটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস, ত্যাগ ও বীরত্বের একটি চিরন্তন সাক্ষী।
স্মৃতিসৌধের গুরুত্ব
Ibn Sina Hospital Dhanmondi Doctor List & Serial Number
স্বাধীনতার প্রতীক: জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক। এটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের স্বাধীনতা কত বড় ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে।
ঐতিহাসিক স্থান: এই স্মৃতিসৌধটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে এসে আমরা আমাদের অতীত সম্পর্কে জানতে পারি।
পর্যটন কেন্দ্র: জাতীয় স্মৃতিসৌধ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।
শিক্ষার কেন্দ্র: এই স্মৃতিসৌধটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি জীবন্ত ইতিহাসের পাঠশালা।
স্মৃতিসৌধের বৈশিষ্ট্য
স্থাপত্য: স্মৃতিসৌধটির স্থাপত্য অত্যন্ত সুন্দর এবং অর্থবহ। এটি সাতটি ত্রিভুজাকৃতির দেয়াল দিয়ে তৈরি। এই সাতটি দেয়াল স্বাধীনতা সংগ্রামের সাতটি ভিন্ন পর্যায়কে নির্দেশ করে।
সবুজ পরিবেশ: স্মৃতিসৌধটির চারপাশে বিশাল একটি সবুজ উদ্যান রয়েছে। এখানে বসে শান্তিপূর্ণ সময় কাটানো যায়।
গণকবর: স্মৃতিসৌধের পাশে একটি গণকবর রয়েছে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সমাহিত করা হয়েছে।
স্মৃতিসৌধে যাওয়ার নির্দেশনা
ঢাকা শহর থেকে সাভার যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পাওয়া যায়। আপনি বাস, ট্রেন বা রিক্সাযোগে সাভার যেতে পারেন। সাভারে পৌঁছে স্থানীয়দের কাছ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ঠিকানা জেনে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন।
স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের সময়
সাধারণত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করা যায়। তবে সরকারি ছুটির দিনে এবং বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিদর্শনের সময়সূচি পরিবর্তিত হতে পারে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশের একটি গর্ব। এই স্মৃতিসৌধটি আমাদেরকে সর্বদা স্মরণ করিয়ে দেবে যে, আমাদের স্বাধীনতা কত বড় ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে।
অরণ্যালয় মিনি চিড়িয়াখানা:
প্রকৃতির কোলে অবস্থিত এই চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, খরগোশ, গিনিপিগ, অজগর, ভাল্লুক এবং বিভিন্ন পাখি দেখতে পাওয়া যায়।
গোলাপ গ্রাম:
ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে ভরপুর এই গ্রামটি ফুলপ্রেমীদের জন্য এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
নন্দন পার্ক:
পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ একটি স্থান।
ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্ক:
শিশুদের জন্য আনন্দদায়ক একটি স্থান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তার সুন্দর ক্যাম্পাস এবং শান্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত।
রাজা হরিশ চন্দ্রের প্রত্নস্থল: ইতিহাসের সাক্ষী
বাংলাদেশের সাভারে অবস্থিত রাজা হরিশ চন্দ্রের প্রত্নস্থল দেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রত্নস্থলটি পাল বংশীয় রাজা হরিশ চন্দ্রের সাথে জড়িত এবং এখানে পাওয়া প্রত্নবস্তুগুলি আমাদেরকে সেই সময়ের জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সাহায্য করে।
প্রত্নস্থলের ইতিহাস
পাল বংশের সাথে সম্পর্ক: এই প্রত্নস্থলটি পাল বংশীয় রাজা হরিশ চন্দ্রের রাজধানী সম্ভারের অংশ বলে ধারণা করা হয়।
খনন কাজ: বিংশ শতাব্দীর শুরুতে এই স্থানে প্রথম খনন কাজ শুরু হয় এবং এর ফলে বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত অনেক প্রত্নবস্তু পাওয়া যায়।
প্রাপ্ত প্রত্নবস্তু: এখান থেকে পাওয়া প্রত্নবস্তুর মধ্যে রয়েছে বৌদ্ধ মূর্তি, মুদ্রা, বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণালঙ্কার এবং গৃহস্থালির সামগ্রী।
প্রত্নস্থলের গুরুত্ব
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: এই প্রত্নস্থলটি পাল বংশের শাসনামলে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য: এখান থেকে পাওয়া প্রত্নবস্তুগুলি আমাদেরকে সেই সময়ের মানুষের জীবনযাত্রা, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং শিল্পকলা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।
পর্যটন: এই প্রত্নস্থলটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান।
সাভারে যাওয়ার উপায়
ঢাকা শহর থেকে সাভারে যাওয়া খুবই সহজ। বিভিন্ন বাস সার্ভিস সাভারে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে।
সাভারে থাকার ব্যবস্থা
সাভারে বিভিন্ন মানের হোটেল ও মোটেল পাওয়া যায়। আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনি থাকার জায়গা বেছে নিতে পারেন।
সাভারে ঘুরতে যাওয়ার আগে এই তথ্যগুলো আপনাকে সাহায্য করবে।
আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
আপনার ভ্রমণ উপভোগ করুন!
১. ঢাকা থেকে সাভারে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় কি?
- ঢাকা থেকে সাভারে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল বাস। বিভিন্ন বাস সার্ভিস সাভারে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে।
২. সাভারে যাওয়ার সময় কত লাগে?
- ঢাকা থেকে সাভারে যাওয়ার সময় প্রায় 30-45 মিনিট লাগে। যানজটের উপর নির্ভর করে সময় কিছুটা বেশিও হতে পারে।
৩. সাভারের কোন দর্শনীয় স্থানটি সবচেয়ে জনপ্রিয়?
- সাভারের সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান হল জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
৪. সাভারে শিশুদের জন্য কোন দর্শনীয় স্থান আছে?
- সাভারে শিশুদের জন্য ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্ক একটি আকর্ষণীয় স্থান। এখানে শিশুরা বিভিন্ন রাইড এবং খেলা উপভোগ করতে পারবে।
৫. সাভারে প্রকৃতির কোলে সময় কাটানোর জন্য কোন স্থান আছে?
- সাভারের অরণ্যালয় মিনি চিড়িয়াখানা প্রকৃতির কোলে সময় কাটানোর জন্য একটি উপযুক্ত স্থান। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী দেখতে পাওয়া যাবে।
৬. সাভারে থাকার জন্য কোন ধরনের হোটেল বা মোটেল পাওয়া যাবে?
- সাভারে বিভিন্ন মানের হোটেল ও মোটেল পাওয়া যায়। আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনি থাকার জায়গা বেছে নিতে পারেন।
৭. সাভারে থাকার জন্য কোন এলাকাটি সবচেয়ে ভালো?
- সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের কাছে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো এলাকা। এখান থেকে সাভারের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে যাওয়া সহজ হবে।